ওয়ারেন, ২৫মার্চ : বাঙালির বারো মাসে তের পার্বণ। আর ঋতুচক্রের শেষ উৎসব বসন্তের দোল। এটি প্রেম ও রঙের উৎসব।  হিন্দু সম্প্রদায়ের একটি জনপ্রিয় উৎসব। তবে শুধু বাঙালি নয়, এই উৎসব স্থান, কাল কিংবা প্রথা ভেদে ভিন্ন ভিন্ন হয়। পৃথিবীর প্রতিটি প্রান্তে বসন্ত ছুঁয়ে যায় ভিন্নতায়। তাই বসন্ত উৎসব পালিত হয় রকমফেরে। উৎসাহ উদ্দীপনায় বসন্ত পালিত হয় পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে।
দোল আর হোলি এক নয়। দোল, হোলির মধ্যে একদিনের পার্থক্য থাকে। বাঙালিরা যেদিন দোল খেলেন তার পরের দিন হোলি পালিত হয়। একই উত্সব, একই রীতি রেওয়াজ, তবে ভিন্ন ভিন্ন দিনে। কেন একই উত্সব এক দিন আগে পরে উদযাপিত হয়, এর কারণ আছে?
বৈষ্ণবদের মতে, দোল পূর্ণিমার দিন শ্রীকৃষ্ণ আবির নিয়ে শ্রীরাধা ও সঙ্গীয় গোপীদের সঙ্গে রঙ খেলায় মত্ত ছিলেন। সেখান থেকেই দোলযাত্রার শুরু। ১৪৮৬ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি, দোল পূর্ণিমা তিথিতে শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর জন্মগ্রহণকে কেন্দ্র করেও এই মহোত্সব পালন করা হয়। এই তিথিকে গৌর পূর্ণিমাও বলা হয়। তবে শ্রীকৃষ্ণ ও তাঁর সঙ্গী এবং গোপীদের সঙ্গে রঙ খেলার অনুষ্ঠানই এই দোলযাত্রার মূল কেন্দ্রবিন্দু। শ্রীকৃষ্ণের লীলা কবে থেকে শুরু হয়েছিল, তা জানা না গেলেও বিভিন্ন পুরাণ ও গ্রন্থে সেই মধুর ও রঙিন কাহিনীর উল্লেখ রয়েছে।
এছাড়া হিন্দু পুরাণে প্রায় ২ হাজার বছর আগে, ইন্দ্রদ্যুম্নের দ্বারা গোকুলে হোলি খেলা প্রচলনের উল্লেখ রয়েছে। তবে ইতিহাস বলছে প্রাচীন ভারতে ইন্দ্রদ্যুম্নের নাম একাধিকবার রয়েছে। তাই এই ইন্দ্রদ্যুম্ন আদতে কে ছিলেন, সেই নিয়ে বিতর্ক রয়েছে।
আবার বসন্ত পূর্ণিমার দিনে ভগবান শ্রীকৃষ্ণ, কেশি নামে একজন অসুরকে বধ করেন। কেশি একজন অত্যাচারী এবং নিষ্ঠুর অসুর ছিলেন। এর জন্য এই অত্যাচারী অসুর দমন হওয়ার জন্য এবং অন্যায় শক্তি ধ্বংস হওয়ায় আনন্দ উৎসবে এই দিনটি উদযাপিত হয়ে থাকে।
রাক্ষসকূলে জন্মগ্রহন করলেও প্রহ্লাদ ছিলেন খুবই ধার্মীক ও বিষ্ণুর ভক্ত। ফলে তাকে হত্যা করা সহজ ছিল না এবং কোনোভাবেই তাকে হত্যা করা যাচ্ছিল না। তখন হিরণ্যকশিপুর তার ছেলেকে পুড়িয়ে মারার নির্দেশ দেন। হিরণ্যকশিপুরের বোন হোলিকা বর পেয়েছিলেন আগুনে কোন দিন ক্ষতি হবে না। তাই প্রহ্লাদকে হত্যা করার জন্য হোলিকা প্রহ্লাদকে কোলে নিয়ে আগুনে ঝাঁপ দেন। কিন্তু হোলিকা বর পাওয়া সত্ত্বেও সেদিন শেষ রক্ষা হয়নি। আগুনে পুড়ে হোলিকা মারা যায় এবং প্রহ্লাদ ভগবান বিষ্ণুর আশীর্বাদে বেঁচে যায়। আর আগুনে ভস্ম হয়ে যায় হোলিকা। 
তারপর থেকেই এই অসুরীয় শক্তির পরাজয় ও শুভ শক্তির জয়কে উদযাপন করতে পালিত হয় হোলি। যা আজও একই রকমভাবে বহমান।  
মূলতদোল পূর্ণিমা বাংলার বসন্ত উৎসবের মধ্যে অন্যতম উৎসব। ফাল্গুন  মাসের পূর্ণিমা তিথিতে এই  উৎসব পালন করা হয়। প্রতি বছর বাঙালীরা এই দিনটিতে রঙ খেলার আনন্দে মেতে ওঠে। দোল পূর্ণিমা যেন বসন্তের আহ্বান। এই উৎসবটি মনে করিয়ে দেয় এবার শীত বিদায়ের পালা ও বসন্তের আগমনের সূচনা। এই দিনটিতে বাঙালিরা একে অপরকে রঙে রাঙিয়ে দেয়। ছোটরা বড়দের পায়ে আবির দিয়ে নিজেরা রঙ খেলায় মেতে উঠে। বাংলা ক্যালেন্ডার অনুযায়ী এটাই বাঙালির বছরের শেষ পরব।
এদিকে দোল পূর্ণিমা উপলক্ষে মিশিগানে মিলছে নানান রঙের আবির ৷  অন্যান্য বছরের ন্যায় এই বছরও দোলযাত্রা ও গৌর পূর্ণিমা উপলক্ষে মিশিগানের বিভিন্ন মন্দির ও বাসা বাড়িতে পুজাসহ বিভিন্ন ধর্মীয় অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা।  
                               
                               
                               
                                                                                                             
                                       
                                       
                                                                                                                      
                                       
                                       
                                       
                                       
                                       
                           
                           
নিউজটি আপডেট করেছেন : Suprobhat Michigan
                            
                       
     
 
 
  নিজস্ব প্রতিনিধি :
 নিজস্ব প্রতিনিধি :  
                                 
  
  
  
  
  
  
  
                            
                             
                                                     
                                                 
                                                     
                                                 
                                                     
                                                 
                                                     
                                                 
                                                     
                                                 
                                                     
                                                 
                                                     
                                                 
                                                     
                                                 
                                                     
                                                 
                                                     
                                                 
                                                     
                                                 
                                                     
                                                 
                                                     
                                                 
                                                     
                                                 
                                                     
                                                 
                                                     
                                                 
  
                                                     
                                                 
                                                     
                                                 
                                                     
                                                 
                                                     
                                                